খবরের সময় ডেস্ক
গাজীপুর মহানগরীর আউটপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া মোঃ বকুল মিয়ার একমাত্র শিশু সন্তান নিশাত বাবু(০৩) নিজ বাসা হইতে অপহৃত হয়। অপহরণের পর ভিকটিম এর পরিবার সম্ভাব্য সকল সথানে খোঁজাখোজি করে না পেয়ে একই দিন দুপুর ১৪.৩০ ঘটিকার সময় বাসন থানায় একটি অপহরণ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন। অপহরণের দিন ভিকটিমের বাবার মোবাইল ফোনে অজ্ঞাতনামা নম্বর থেকে ফোন আসে এবং তার শিশু সন্তান নিশাত বাবু(০৩) কে সে অপহরণ করেছে বলে জানায় এবং তার মুক্তিপণ হিসেবে ০৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। অন্যথায় অপহরণকারী তার ছেলেকে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে জানায়। পরবর্তীতে খোঁজাখোজির এক পর্যায়ে র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প, গাজীপুর এর কাছে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য আইনগত সহায়তা কামনা করেন। অভিযোগ প্রাপ্ত হওয়ার পর অপহৃত ভিকটিম উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে লেঃ কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল, অধিনায়ক র্যাব-১ এর দিক নিদের্শনায় অত্র কোম্পানীর কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি), বিএন র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন, (জি), বিএন দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করেন।
রাত আনুমানিক ২২.৩০ ঘটিকায় র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা ১। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান(১৮), পিতা-আবুল কাশেম@তারা, মাতা-মোসা-মজিদা বেগম, সাং-ডুবারচর, থানা-সদর, জেলা-শেরপুর, এ/পি-সাং-আউটপাড়া (শওকত আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া), থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুর’কে আটক করে এবং তার দখল হতে মুমূর্ষ অবস্থায় অপহৃত ভিকটিম নিশাত বাবু(০৩), পিতা-মোঃ বকুল মিয়া, সাং-যৌতগ্রাম ধনপুর, থানা-চিরিরবন্দর, জেলা-দিনাজপুর, এ/পি- সাং-আউটপাড়া (শওকত আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া), থানা-বাসন, জিএমপি, গাজীপুর’কে উদ্ধার করে। এসময় ধৃত আসামীর নিকট হতে ০১টি ধারালো সুইচ গিয়ার, ০১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রকাশ থাকে যে, পূর্বে বিভিন্ন সময় গাজীপুরে কয়েকটি শিশু অপহৃত হয় এবং পরবর্তীতে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে অপহরণকারীরা ভিকটিমকে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে র্যাব ভিকটিম উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বিধায় র্যাব উক্ত বিষয়ে সবর্দা তৎপর ছিল।
ধৃত আসামীর ভাষ্যমতে, ধৃত আসামী মোস্তাফিজুর গাজীপুর মহানগরীর ভাওয়াল বদলে আলম সরকারী কলেজের পাশে অবস্থিত এলএফ সিকিউরিটি নামক প্রতিষ্ঠানে পিয়ন পদে চাকুরী করত এবং ভিকটিমের সাথে একই বাড়ীতে ভাড়া থাকত উক্ত প্রতিষ্ঠানে ভিকটিমের পিতা রিক্রুরিং অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ০৪ দিন আগে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে চুরির দায়ে ভিকটিমের পিতা ধৃত আসামী মোস্তাফিজুরকে চাকুরী হতে বরখাস্ত করে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়। উক্ত ঘটনার কারণে ধৃত আসামী ভিকটিমের পিতার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে একটি ধারালো চাকু কিনে তার মালিকের ছেলেকে অপহণের টার্গেট করে। এছাড়াও ধৃত আসামীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল যে, যেকোন উপায়ে বিপুল টাকা উপার্জন করে গাজীপুর শহরে একটি সন্ত্রাসী দল গঠন করে, একটি ফ্ল্যাট বাসা ক্রয় করে সুন্দর ভাবে জীবন-যাপন করবে যার ফলশ্রুতিতে এবং অফিস থেকে চুরির দায়ে চাকুরী থেকে রেব করে দেওয়ায় ভিকটিমের পিতার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পূর্ব পলিকল্পনা অনুযায়ী ইং-১৭-০৯-২০২০ তারিখ সকাল ১১.১৫ ঘটিকার দিকে ভিকটিম তার বাসার নিচে খেলা করতেছিল এবং সুযোগ মতো ধৃত আসামী তাকে অপহরণ করে প্রথমে গাজীপুর থেকে বাসে করে ঢাকা মহাখালীতে নিয়ে যায় এবং সু-কৌশলে ভিকটিমের পিতার মোবাইল কল করে তার ছেলে নিশাত বাবু(০৩) এর অপহরণের কথা জানায় ও তার মুক্তিপন হিসেবে ০৩ লক্ষ টাকা দাবি করেন অন্যথায় তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার হৃমকি দেয়। পরবর্তীতে মহাখালী ঢাকা হতে বাসে করে রাত অনুমান ২০.৩০ ঘটিকার সময় গাজীপুর জেলার চন্দ্রা এলাকায় আসে এবং মুক্তিপনের টাকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলে র্যাব-১ এর চৌকস আভিযানিক দল তাকে আটক করে তার দখলে থাকা একটি সুইচ গিয়ার সহ ভিকটিম নিশাত বাবু(০৩) কে জীবিত উদ্ধার করে। ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিমের পিতার উপর প্রতিশোধ নিতে এবং তার দীর্ঘদিনের ধনী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সে এই অপহরণ করেছে বলে স্বীকার করে। ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপনের টাকা পাওয়া মাত্র তার সাথে থাকা ধারালো সুইচ গিয়ার দিয়ে শিশুটিকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং শিশুটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণকারী বাগানে অবস্থান নেয়।